ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী এখনো আছে, শুধু পোশাক পাল্টিয়েছে

একটা বিষয় খুব ভাল করে খেয়াল করছি। দেশের যে ইয়ুথ প্লাটফর্মগুলো বেশ পরিচিতি পায় তাদের উদ্যোগ পশ্চিমাদের কাছে বিক্রি হয়ে যায়। তারা শুরু করে ভাল উদ্দেশ্যে, অনেক খাটুনি করেন। তাদের কেউ কেউ ধর্মকর্মও করেন। কিন্তু দিনশেষে দেশের মূল্যবোধ বিরোধী পশ্চিমা…

একটা বিষয় খুব ভাল করে খেয়াল করছি। দেশের যে ইয়ুথ প্লাটফর্মগুলো বেশ পরিচিতি পায় তাদের উদ্যোগ পশ্চিমাদের কাছে বিক্রি হয়ে যায়। তারা শুরু করে ভাল উদ্দেশ্যে, অনেক খাটুনি করেন। তাদের কেউ কেউ ধর্মকর্মও করেন। কিন্তু দিনশেষে দেশের মূল্যবোধ বিরোধী পশ্চিমা প্রকল্প তারা বাস্তবায়নে সহযোগী হয়ে যান।

তাদের সামাজিক এক্টিভিটি কিছুটা পরিচিতি পাইলে বিভিন্ন এম্বেসী, দাতা সংস্থার নজরে পড়ে যান। উদ্যোগের জন্য পুরুষ্কার দেয়া হতে পারে, ডেকে নিয়ে কফি খাওয়াবে। বিভিন্নজনের সাথে লিংক করিয়ে ফান্ডের ব্যবস্থা করে দিবে।

এতে অতিসাধারণ মানুষটি হালকা সন্মাননার ফাদে পড়ে নিজেদের আইন্ডেন্টিটি বিরোধী কাজে পশ্চিমাদের সহযোগী বনে যান। আফসোস।

এরপর বিখ্যাত হতে থাকেন, আর অন্যদিকে কারোর ক্ষেত্রে নিজের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হতে পারে। কিন্তু দিনশেষে তারা আর সেই ফাঁদ থেকে বের হয়ে আসতে পারেন না।

তাই যারা সমাজের জন্য ভাল কাজ করছেন তাদের উচিত সবসময় আল্লাহমুখী হওয়া। তা না হলে ভাল প্রচেষ্টাগুলো আখেরাতে বিপদে কারণ হতে পারে।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী এই অঞ্চলের মানুষের মন পড়তে পারত বিধায়, মাত্র কয়েক হাজার ব্রিটিশ প্রায় ২৫০ মিলিয়ন লোককে শাসন করে গেছে। ব্রিটিশরা নৃ-বিজ্ঞান গবেষণায় জোর দিতো।

তারা এখনো আছে, শুধু পোশাক পাল্টিয়েছে!

ব্র্যা-ক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে জয়েন করার পর সাভার ক্যাম্পাসে ট্রেইনিং করতে গিয়েছিলাম। প্রো-ভিসি ড গোলাম সামদানী সাহেব এটা পরিচালনা করতেন। তিনি পরে গ্রীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে জয়েন করেন। উনাকে পুরো ব্র্যা-ক কার্যক্রমে যে এক্টিভিটি-বেইজ লার্নিং সিস্টেমের গুরু বলা হয়।

স্বভাবসুলভ উনাকে একটা প্রশ্ন করেছিলাম। সন্ধ্যার পর এক খোলামেলা আলাপে বললাম, বিদেশী সংস্থার দাতারা কেন বাংলাদেশকে ফান্ডিং করে? এতে তাদের স্বার্থ কি?

তিনি জবাবে বলেছিলেন, কেউ ফ্রি টাকা দেয় না। তারা তাদের ভ্যালু সিস্টেম বা মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা মূল লক্ষ্য।

আগের মত দেশ দখল করা এখন কঠিন। এখন সংস্কৃতি তথা মূল্যবোধকে কন্ট্রোল নিতে চেষ্টা করে। এর ফলে তথাকথিত গনতন্ত্র সিস্টেমের কথা বলে তাদের পছন্দের লোক কে ক্ষমতায় বসায়।

অন্যদিকে রাজনৈতিক নেতাদের কন্ট্রোল করতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মত প্রভাবশালী কিছু বেসরকারি সংস্থা বানায়। এমনভাবে তাদের দিয়ে কাজ করায়, দোষ হলে তা সরকারের ঘাড়ে পড়ে। অর্থাৎ পলিটিক্যাল পার্টির লিডাররা বলির পাঠা হয়।

কেয়ারটেকার সরকারের সময় প্রফেসর ইউনুসকে পশ্চিমা পক্ষ প্রধানমন্ত্রী বানাতে সামনে এনেছিল। উনি টিপিক্যাল বাঙালীর মত খুশী হয়ে চরম বোকামীর পরিচয় দেন।

দুই বড় দলের লিডারদের জেলে রেখে (মাইনাস টূ ফর্মূলা) ইউনুস সাহেবকে ক্ষমতায় আনতে চেয়েছিল। দিনশেষে ইউনুস সাহেব বলির পাঠা হয়েছেন। উনাকে শুধু হা-পিত্যেশ করে যেতে হবে বলে মনে হয়।

আমরা সবার সহযোগিতা নিবো, কিন্তু মনে রাখতে হবে আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ তথা আইডেন্টিটিকে জলাঞ্জলি দিয়ে নয়। এজন্য আমাদের সচেতন হতে হবে। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলে ওরা পারবে না।

Similar Posts