এই দেশে রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে কারা অসহায়? মূল্যবোধের পক্ষের, নাকি বিপক্ষের লোকরা?

বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ী প্রস্তুত। এক অজানা শঙ্কাকে সাথী করে তেজগাঁর দিকে রওনা হলাম। কি অদ্ভুত অভিজ্ঞতা! মনের মধ্যে হাজারো চিন্তা ঘুরছিল—আজকের এই বিশেষ জরুরী মিটিংয়ে কী অপেক্ষা করছে? আমি কি আর ক্লাসে ফিরতে পারবো? প্রতিটি ধাপ যেন কাঁধের ওপর এক টন…

বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ী প্রস্তুত। এক অজানা শঙ্কাকে সাথী করে তেজগাঁর দিকে রওনা হলাম। কি অদ্ভুত অভিজ্ঞতা! মনের মধ্যে হাজারো চিন্তা ঘুরছিল—আজকের এই বিশেষ জরুরী মিটিংয়ে কী অপেক্ষা করছে? আমি কি আর ক্লাসে ফিরতে পারবো? প্রতিটি ধাপ যেন কাঁধের ওপর এক টন ভরের মত লাগছিল।   

অবশেষে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সামনে বসে গেলাম। তাঁর চোখে ছিল এক ধরনের দুশ্চিন্তা। “আপনাকে ফোন করে ডেকে আনা হয়েছে।”

আসিফ মাহতাব শরীফার ইস্যুতে বইয়ের পাতা ছেড়ার মাধ্যমে অভিনব প্রতিবাদ করে। 

এই ইস্যুতে আমাকে জঙ্গি কানেকশনের অভিযোগ করা হয়। হৃদয় স্পন্দন থমকে গেল। টার্মিনেশন লেটার? উনি সেই লেটারটি সামনে রেখে কথা বলা শুরু করলেন…  

প্রতিবাদ জানালাম, “আমি তো কোন অন্যায় করিনি। আপনাদের সন্তান এবং বংশধররা যেন ক্ষতির মধ্যে না পড়ে তা নিয়ে ছিল আমার সচেতনতা। 

কিন্তু, তাঁর চোখে অক্ষমতার ছায়া। “আমাদের করার কিছু নেই। বিশ্ব এখন এরকম চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো শক্তি নেই।”  

তিনি সক্রেটিসের সেই নির্মোহ কাহিনী শুনিয়ে সাহস দিলেন, আবার অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন। প্রাচীন গ্রিসের সেই দার্শনিক, যিনি সত্যের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন। সক্রেটিসকে হ্যামলক পান করানো হয়েছিল—সত্য পথে চলার জন্য। সত্য এবং ন্যায়ের জন্য জীবন দিতে হলো তাঁকে, সবাই জানত সক্রেটিস নির্দোষ… এই গল্প বলার মাধ্যমে আমাকে এক ধরণের মানসিক শান্তনা দেয়া চেষ্টা করলেন…

দৃঢ় কন্ঠে বললাম, “আমি রিজাইন দিবো না। বরখাস্ত করতে পারেন, কিন্তু আমি কোনো অন্যায় করিনি।” আমার কথায় সাহস ছিল, কিন্তু ভিতরে বিস্মিত হওয়ার একধরণের হাহাকারের অনুভূতি।  

জানি, সত্যের পথে দাঁড়ানো সহজ নয়। সক্রেটিস যেমন নিজের বিশ্বাসের জন্য মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন, আমার ক্যারিয়ার শেষ হবে, জেলে ভরা হবে। কিন্তু, আমাদের সন্তান এবং বংশধরদের জন্য লড়াই করে যাবো… 

এটা শুধু আমার নয়, এটা প্রতিটি মানুষের লড়াই—মূল্যবোধের জন্য দাঁড়ানোর, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার। 

পালটা প্রশ্ন করলাম, ইতিহাসে লিখিত আছে সক্রেটিসের সাথে অন্যায় করা হয়েছে। এখন কি সেই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিবো না? 

অবশেষে তারাও কিছুটা আবেগতাড়িত হলেন… জঙ্গি ব্যাপারটা রহস্য উদ্ঘাটন করতে দুই সপ্তাহ সময় চেয়ে ছিলাম… আবেগের কাছে হার মেনে এক সপ্তাহের সময় দিলেন…

কানাডা প্রবাসী ছোট ভাই তখন দেশে। এলাকার এমপি সাহেবের বাসায় নিয়ে গেল, যদি তিনি একটা ফোন করে দেন, যে আমার এই ভাইটি জঙ্গি নয়… এত লোকের ভীড় দেখে ঢাকায় চলে আসলাম… ওকে সাহস দিয়ে বললাম, আল্লাহ অবশ্যই আছেন… তিনিই আমাকে রক্ষা করবেন…

যে ডিজিএফআইয়ের লোকরা কারোর সাথে যোগাযোগ করলে ভয়ে রক্ত হিম হওয়ার মত অবস্থা হয়, উনাকেই ফোন দিয়ে খুলে বললাম…

তিনি আমার সিভি নিলেন, ডিজিএফআইয়ের চিফ এই ইস্যুতে জড়িত হলেন… 

এই দেশে রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে কারা অসহায়? মূল্যবোধের পক্ষের, নাকি বিপক্ষের লোকরা? 

এটা শরীফা ইস্যুতে জানুয়ারি ২০২৪ এর ঘটনা

আন্ডারগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছিলাম। হঠাত ফোন বেজে উঠল। অশুভ সংকেত। “ক্লাস শেষ করে আসবো,” বলেছিলাম, কিন্তু পাল্টা উত্তর এল, “এটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ী প্রস্তুত। এক অজানা শঙ্কাকে সাথী করে তেজগাঁর দিকে রওনা হলাম। কি অদ্ভুত অভিজ্ঞতা! মনের মধ্যে হাজারো চিন্তা ঘুরছিল—আজকের এই বিশেষ জরুরী মিটিংয়ে কী অপেক্ষা করছে? আমি কি আর ক্লাসে ফিরতে পারবো? প্রতিটি ধাপ যেন কাঁধের ওপর এক টন ভরের মত লাগছিল।   

অবশেষে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সামনে বসে গেলাম। তাঁর চোখে ছিল এক ধরনের দুশ্চিন্তা। “আপনাকে ফোন করে ডেকে আনা হয়েছে।”

আসিফ মাহতাব শরীফার ইস্যুতে বইয়ের পাতা ছেড়ার মাধ্যমে অভিনব প্রতিবাদ করে। 

এই ইস্যুতে আমাকে জঙ্গি কানেকশনের অভিযোগ করা হয়। হৃদয় স্পন্দন থমকে গেল। টার্মিনেশন লেটার? উনি সেই লেটারটি সামনে রেখে কথা বলা শুরু করলেন…  

প্রতিবাদ জানালাম, “আমি তো কোন অন্যায় করিনি। আপনাদের সন্তান এবং বংশধররা যেন ক্ষতির মধ্যে না পড়ে তা নিয়ে ছিল আমার সচেতনতা। 

কিন্তু, তাঁর চোখে অক্ষমতার ছায়া। “আমাদের করার কিছু নেই। বিশ্ব এখন এরকম চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো শক্তি নেই।”  

তিনি সক্রেটিসের সেই নির্মোহ কাহিনী শুনিয়ে সাহস দিলেন, আবার অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন। প্রাচীন গ্রিসের সেই দার্শনিক, যিনি সত্যের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন। সক্রেটিসকে হ্যামলক পান করানো হয়েছিল—সত্য পথে চলার জন্য। সত্য এবং ন্যায়ের জন্য জীবন দিতে হলো তাঁকে, সবাই জানত সক্রেটিস নির্দোষ… এই গল্প বলার মাধ্যমে আমাকে এক ধরণের মানসিক শান্তনা দেয়া চেষ্টা করলেন…

দৃঢ় কন্ঠে বললাম, “আমি রিজাইন দিবো না। বরখাস্ত করতে পারেন, কিন্তু আমি কোনো অন্যায় করিনি।” আমার কথায় সাহস ছিল, কিন্তু ভিতরে বিস্মিত হওয়ার একধরণের হাহাকারের অনুভূতি।  

জানি, সত্যের পথে দাঁড়ানো সহজ নয়। সক্রেটিস যেমন নিজের বিশ্বাসের জন্য মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন, আমার ক্যারিয়ার শেষ হবে, জেলে ভরা হবে। কিন্তু, আমাদের সন্তান এবং বংশধরদের জন্য লড়াই করে যাবো… 

এটা শুধু আমার নয়, এটা প্রতিটি মানুষের লড়াই—মূল্যবোধের জন্য দাঁড়ানোর, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার। 

পালটা প্রশ্ন করলাম, ইতিহাসে লিখিত আছে সক্রেটিসের সাথে অন্যায় করা হয়েছে। এখন কি সেই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিবো না? 

অবশেষে তারাও কিছুটা আবেগতাড়িত হলেন… জঙ্গি ব্যাপারটা রহস্য উদ্ঘাটন করতে দুই সপ্তাহ সময় চেয়ে ছিলাম… আবেগের কাছে হার মেনে এক সপ্তাহের সময় দিলেন…

কানাডা প্রবাসী ছোট ভাই তখন দেশে। এলাকার এমপি সাহেবের বাসায় নিয়ে গেল, যদি তিনি একটা ফোন করে দেন, যে আমার এই ভাইটি জঙ্গি নয়… এত লোকের ভীড় দেখে ঢাকায় চলে আসলাম… ওকে সাহস দিয়ে বললাম, আল্লাহ অবশ্যই আছেন… তিনিই আমাকে রক্ষা করবেন…

যে ডিজিএফআইয়ের লোকরা কারোর সাথে যোগাযোগ করলে ভয়ে রক্ত হিম হওয়ার মত অবস্থা হয়, উনাকেই ফোন দিয়ে খুলে বললাম…

তিনি আমার সিভি নিলেন, ডিজিএফআইয়ের চিফ এই ইস্যুতে জড়িত হলেন… 

এই দেশে রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে কারা অসহায়? মূল্যবোধের পক্ষের, নাকি বিপক্ষের লোকরা? 

এটা শরীফা ইস্যুতে জানুয়ারি ২০২৪ এর ঘটনা

Similar Posts