ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি স্যার সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ

আমাদের আইইউবি’র ভারপ্রাপ্ত ভিসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হয়েছেন। উনি মিডিয়া সেলিব্রেটি নন। তাই অপরিচিত বলা যায়। কিন্তু প্রফেসর নিয়াজ স্যার এনজিও সেক্টরের সম্ভবত পরিচিত মানুষ। উনার এক্সপার্টিজ ডেভেলোপমেন্ট সেক্টরে।.৩টি ইস্যুতে আমার জানার সুযোগ হয়েছে। ২০২২ সালে ডেংগু নিয়ে গবেষণার জন্য…

আমাদের আইইউবি’র ভারপ্রাপ্ত ভিসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হয়েছেন। উনি মিডিয়া সেলিব্রেটি নন। তাই অপরিচিত বলা যায়। কিন্তু প্রফেসর নিয়াজ স্যার এনজিও সেক্টরের সম্ভবত পরিচিত মানুষ। উনার এক্সপার্টিজ ডেভেলোপমেন্ট সেক্টরে।
.
৩টি ইস্যুতে আমার জানার সুযোগ হয়েছে। ২০২২ সালে ডেংগু নিয়ে গবেষণার জন্য ইংল্যান্ডের NIHR রিসার্চ গ্রান্টের জন্য ৩ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি কলাবোরেটিভ প্রজেক্ট আইইউবি থেকে এপ্লাই করেছিলাম। প্রতিষ্ঠানের লেটারের জন্য আমাদের ডীন সাহেব সাইন করতে রাজি হচ্ছিলেন না।
.
খুব আপসেট হয়ে নিয়াজ স্যারের যোগাযোগ করেছিলাম এই সমস্যা সমাধানে। তিনি বলেছিলেন- ডীন যদি সাইন না করেন তবে তিনি প্রো-ভিসি হিসেবে নিজেই সাইন করে দিবেন। তিনি এটাও আমাকে বুঝিয়েছিলেন যে ডীনের সম্মতি ছাড়া ফান্ড পাইলে তিনি পদে পদে ঝামেলা লাগাতে পারেন। পরে স্যারের উদ্যোগে সমস্যাটি সমাধান হয়।
.
এলজিবিটি ইস্যু আইইউবিতে বড় ঘটনা ছিল। আমাকে জঙ্গী ট্যাগ দিয়ে চাকুরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই কঠিন পরিস্থিতির সময় মনে হয়েছিল স্যার আমার প্রতি সহানুভূতিশীল।
.
শিক্ষার্থী আন্দোলনের জন্য আমাদের ভিসি সম্প্রতি পদত্যাগ করতে বাধ্য হোন। তখন নিয়াজ স্যার ভারপ্রাপ্ত ভিসি হোন। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়ে কিছু যৌক্তিক দাবী তুলে। পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে তিনি খুব টেনশনে ছিলেন কয়েকদিন আগেও। আমাকে পার্সোনালি রিকুয়েস্ট করেছিলেন যাতে আমি শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে ভূমিকা রাখি। স্যার মনে করে আমি একজন শিক্ষার্থী ফ্রেন্ডলি শিক্ষক। স্যারের অনুরোধে আইইউবি ফেসবুক গ্রুপে শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে বড় একটি পোস্ট লিখেছিলাম। শিক্ষার্থীরা সেটি পজিটিভলি নিয়েছিল বলে প্রতিয়মান হয়।
.
স্যার নিয়মিত সালাত আদায় করেন। আমাদের সাথে প্রায়ই জোহর ও আসর সালাতে সময় আইইউবি’র নামাজের রুমে দেখা হতো। তিনি সম্ভবত আইইউবি’র একমাত্র ভিসি যিনি নামাজে রুমে সবার সাথে জামাতে সালাত আদায় করেন।
.
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি পদ হচ্ছে আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্টের মত। লিডারশীপ দেখানোর মত তেমন সুযোগ নেই, কেননা ভিসি সাহেবরা সাধারনত প্রচন্ড কর্তৃত্ব পরায়ণ হতে দেখেছি। তাই তিনি ভিসি হিসেবে কেমন করবেন তা সময়ই বলে দিবে।
.
স্যারের রিসার্চ প্রোফাইল বাংলাদেশী স্ট্যান্ডার্ডে ভাল বলা যায়। তিনি রিসার্চ নিয়ে আলোচনা করতেন।
.
বাস্তবতা হচ্ছে- বাংলাদেশে নিরপেক্ষ লোক খুঁজে পাওয়া দুরুহ কাজ। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে।
.
নিয়াজ স্যারকে অভিনন্দন জানাই। উনার জন্য দোয়া রইল।
.
ব্যক্তিগতভাবে এই জন্য খুশী যে ঢাবিতে পরিচিত কোন ইসলাম বিদ্বেষী ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন না। আলহামদুলিল্লাহ।

– ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন

Similar Posts